আজ ৩রা কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ১৯শে অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

বৃষ্টিস্নাত ঈদ-উল- আযহার নামাজ অনুষ্ঠিত ওইতিহাসিক শোলাকিয়া মাঠে

রেজাউল হাবিব রেজাঃ

শূলকুন থেকে যে শোলাকিয়ার নামকরণ সেই মাঠে বৃষ্টিস্নাত ঈদু’ল আযহার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়েছে আবহাওয়ার প্রতিকূলতায়।

 বিশেষ সতর্কতা ও কঠোর নিরাপত্তা  ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানে ১৯৬তম পবিত্র ঈদুল আজহার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়েছে।আজ বৃহস্পতিবার ২৯ জুন-২০২৩ সকাল ৯টায় এ ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়।  নামাজের ইমামতি করেন মাওলানা হিফজুর রহমান। দূর-দূরান্তের মুসল্লিদের ঈদগাহ মাঠে আসার সুবিধার্থে ময়মনসিংহ ও ভৈরব থেকে দুইটি স্পেশাল ট্রেন যাতায়াত বরাদ্দ করে রেল কর্তৃপক্ষ । এদিকে, ঈদগাহ ময়দানে মুসল্লিদের প্রবেশের জন্য ৫টি প্রবেশপথ উন্মুক্ত রাখা হয়। এসব প্রবেশপথে স্থাপিত আর্চওয়ে দিয়ে মুসল্লিরা শৃঙ্খলাবদ্ধ হয়ে ঈদগাহে প্রবেশ করেন। ঈদের নামাজ শেষে মোনাজাতে মাওলানা হিফজুর রহমান দেশ ও মুসলিম উম্মাহর শান্তি-কল্যাণ ও উত্তরোত্তর সমৃদ্ধি কামনা করেন। ঈদের জামাতে তদারকির প্রয়েজনে প্রশাসনের পক্ষ হতে  উপস্থিত ছিলেন শোলাকিয়া ঈদগাহ পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ, পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ রাসেল শেখ, কিশোরগঞ্জ পৌরসভার মেয়র পারভেজ মিয়া , শোলাকিয়া ঈদগাহ পরিচালনা কমিটির সম্পাদক ও কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ আলী সিদ্দিকীসহ সরকারি কর্মকর্তা, রাজনৈতিক দলের নেতারা ও সুধীজন।  শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানের নিরাপত্তায় গড়ে তোলা হয় কয়েক স্তরের নিশ্ছিদ্র প্রশাসনিক ব্যবস্থা। তাছাড়া গোয়েন্দা নজরদারিসহ বিজিবি, র‌্যাব, আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ানসহ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ছিলো বিশেষ সতর্কতায়। ঈদের জামাত মনিটরিং করতে স্থাপন করা হয় সিসি ক্যামেরা, ড্রোন ক্যামেরা ও ওয়াচ টাওয়ার।১৮২৮ সালে এই মাঠে ঈদের জামাতের সূত্রপাত হয়েছে বলে জানা যায়। তবে সোয়া লাখ মুসল্লি একসঙ্গে নামাজ আদায় করেছিলেন বলে যে তথ্য আছে তা নিতান্তই অনুমান। তবে ওইতিহাসিক ও বাস্তবতার নিরিখে ইতিহাস পর্যবেক্ষণে জানা গেছে এদেশটি যখন ভারতীয় উপমহাদেশের অন্তর্ভুক্ত ছিলো তখন কলকাতা হতে দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিগণ শুল্ক ওঠানোর জন্য নৌকাযোগে এ স্থলে অবস্থান করতেন। এই নৌকাগুলোকে বলা হতো শুলকুন।   সেই থেকে শাব্দিক বিবর্তনে শুলকুন থেকে এই মাঠের নামকরণ করা হয় “শোলাকিয়া।” বিভিন্ন দলিল-দস্তাবেজ ঘেটে জানা যায়, ১৯৫০ সালে শোলাকিয়া ঈদগাহের জন্য জমি ওয়াকফ করার ২০০ বছর আগে থেকে শোলাকিয়া মাঠে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হচ্ছে। প্রায় সাড়ে ৬ একর আয়তনের শোলাকিয়ায় প্রতি বছর ঈদের জামাতে বিশেষ করে ঈদ-উল-ফিতরের জামাতে কয়েক লাখ মুসল্লির ঢল নামে।  কিন্তু ঈদ-উল-আযহার জামাতে লোক সমাগম কম হয়। কোরবানি জনিত কারণেই  এ ঈদে মুসুল্লীরা আসতে পারেন না।অনেকের দাবি,  মাঠটিতে বর্ষারদিনে নামাজপড়ার সমস্যা লাঘব করতে কোনো সামিয়ানা ব্যবস্থা করতে পারলে মুসুল্লীদের ভোগান্তির উপশম হতো।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     More News Of This Category